ট্রাম্পের শুল্কনীতি: বাংলাদেশের ভোজ্যতেলের দামে স্বস্তির সম্ভাবনা !
যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে বিশ্ববাজারে সয়াবিন ও ভোজ্যতেলের দামে বড় পরিবর্তনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসনের চীনা পণ্যের ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপ এবং চীনের পাল্টা শুল্ক আরোপের ফলে সয়াবিনের মতো কৃষিজ পণ্যের চাহিদা ও সরবরাহে বৈশ্বিক পরিবর্তন আসতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, চীন যুক্তরাষ্ট্র থেকে সয়াবিন আমদানি কমিয়ে দিলে দেশটির অভ্যন্তরীণ বাজারে সয়াবিনের চাহিদা কমে যাবে, যা সরাসরি এর মূল্য হ্রাসে ভূমিকা রাখবে। যুক্তরাষ্ট্রের সয়াবিনের দাম কমলে বিশ্ববাজারেও এর প্রভাব পড়বে, যা বাংলাদেশে ভোজ্যতেলের দাম কমাতে সহায়ক হতে পারে।
ভোজ্যতেলের দাম কমলে সম্ভাব্য প্রভাব
বাংলাদেশে ভোজ্যতেলের বার্ষিক চাহিদা প্রায় ২৫ লাখ টন, যার ৪৫ শতাংশই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা হয়। সয়াবিন তেলের দাম কমলে পোল্ট্রি ফিড, দুগ্ধজাত পণ্য এবং গবাদি পশুর খাদ্যের দামও কমে যেতে পারে।
বিশ্ববাজারের বর্তমান অবস্থা
বর্তমানে বিশ্ববাজারে প্রতি টন সয়াবিনের দাম ৪৮০ ডলার, যা ছয় মাস আগের ৫৩০ ডলার থেকে কমেছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আরও দামের ওঠানামা হতে পারে।
মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের উপমহাব্যবস্থাপক মো. তসলিম শাহরিয়ার জানান, সয়াবিন চাষের মৌসুম এবং ভালো সরবরাহের কারণে দাম আরও কমার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ইন্দোনেশিয়ার পাম তেলের ব্যবহার বৃদ্ধি এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ পাম উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
বাংলাদেশের আমদানির ওপর নির্ভরতা
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্র থেকে সয়াবিন আমদানির পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। ইউএসএসইসির তথ্য অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ প্রায় ১.৮৯ মিলিয়ন টন সয়াবিন ও ভোজ্যতেল আমদানি করেছে।
ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বাণিজ্য যুদ্ধ এবং বৈশ্বিক মুদ্রাস্ফীতির প্রভাব যদি স্থিতিশীল হয়, তাহলে বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ভোজ্যতেলের বাজার আরও সাশ্রয়ী হতে পারে। তবে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা এই পরিবর্তনের প্রতি কতটা দ্রুত সাড়া দেবে, তা এখনও প্রশ্নসাপেক্ষ।
বিশ্ববাজারে সয়াবিন এবং ভোজ্যতেলের দামের পরিবর্তন বাংলাদেশি ভোক্তাদের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলতে পারে। সুতরাং, বাণিজ্য নীতির পরিবর্তনের প্রতি সচেতন দৃষ্টি রাখা জরুরি।