যুদ্ধ শুধুই কি অধিকার বা ক্ষমতার লড়াই? নাকি একটি লাভজনক ব্যবসা?
যুদ্ধ! মানে ধ্বংস, মানে মৃত্যু। আর ? আর মানে রমরমা ব্যবসা ! কি অবাক হচ্ছেন? হবার ই কথা। কিন্তু এটাই সত্যি। যুদ্ধ কারো জন্য ধ্বংস আর মৃত্যুর দূত তো কারো জন্য লাভজনক ব্যবসার একটি কৌশল মাত্র। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ হতে শুরু করে আজকের ইউক্রেন -রাশিয়ার যুদ্ধ বা ফিলিস্তিন – ইসরাইল যুদ্ধ, সবগুলোর পিছনেই রয়েছে ব্যবসায়িক উদ্দেশ্য। কিন্তু কিভাবে? কারাই বা এই ব্যবসার মুল হোতা? সেটাই জানবো আজকের ব্লগ-এ।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধঃ (First World War)
১৯১৪ থেকে ১৯১৮ সালের মধ্যে সংঘটিত হওয়া এই যুদ্ধটি তখন পর্যন্ত ছিল পৃথিবীর সর্ববৃহৎ যুদ্ধ। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ সংঘটিত হবার কারণ আমরা সবাই এটাই জানি যে, ১৯১৪ সালের ২৮ জুন বসনিয়ার রাজধানী সারায়েভো শহরে অস্ট্রিয়ার যুবরাজ আর্কডিউক ফ্রানৎস ফার্ডিনান্ড (Archduke Franz Ferdinand) এক সার্বিয়ান নাগরিকের গুলিতে নিহত হন। অস্ট্রিয়া এ হত্যাকাণ্ডের জন্য সার্বিয়াকে দায়ী করে এবং ওই বছরের ২৮ জুন সার্বিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। এ যুদ্ধে দুদেশের বন্ধু রাষ্ট্রগুলো ধীরে ধীরে জড়িয়ে পড়ে। এভাবে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের যার ব্যাপ্তি কাল ছিল ১৯১৪-১৯১৮ তার সূচনা হয়। কিন্তু সত্যিই কি অস্ট্রিয়ার যুবরাজ হত্যাকাণ্ডই প্রথম বিশ্বযুদ্ধের একমাত্র কারণ? উত্তর হলো “না”। এটিই একমাত্র কারণ ছিল না।
বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে ইউরোপজুড়ে পুরো-দমে শিল্প-বিপ্লব চলছিল। তেল, গ্যাস, কয়লা ও আরও মূল্যবান খনিজ সম্পদ-সমৃদ্ধ নতুন নতুন অঞ্চলের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার জন্য নতুন নতুন শিল্প ও উৎপাদন–প্রযুক্তি উদ্ভাবিত হচ্ছিল। ব্রিটিশ সাম্রাজ্য যখন ৫টি মহা-দেশব্যাপী বিস্তৃত ছিল এবং আফ্রিকার অনেক উপনিবেশ যখন ফ্রান্সের নিয়ন্ত্রণাধীন, তখন উপনিবেশ স্থাপনের এই খেলায় জার্মানিও ভালোভাবে শরিক হতে চাইছিল। সবাই চাইছিলো নিজেদের কর্তৃত্ব বজায় রাখতে। সবার এই একি দুর্বলতা থেকে শুরু হয় প্রথম বিশ্বযুদ্ধ। যা থেকে দারুণভাবে উপকৃত হয় ইহুদিরা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
ইহুদিরা অর্থ সংকটে থাকা যুদ্ধরত দেশ-গুলতে অর্থ লগ্নী করত আর সেই টাকায় দেশগুলো সামরিক সরঞ্জাম কিনে নিতো আমেরিকা থেকে। এছাড়া যুদ্ধের সুযোগ নিয়ে আমেরিকা ইউরোপে উৎপাদিত পণ্য সেখানকার কৃষকদের কাছ থেকে স্বল্প মূল্যে কিনে নিতো নিজেদের কাঁচামাল হিসেবে।
আর তারপর, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর মার্কিনীরা হয়ে উঠেছিল বিশ্বের প্রধান অর্থ ও শিল্পপন্যের রপ্তানিকারক। যার ফলে বিনিময়ের মাধ্যমও বদলে গিয়েছিল নাটকীয় ভাবে। ব্রিটেন আগে পণ্য লেনদেন করত পণ্যের বিনিময়ে। কিন্তু প্রথম বিশ্ব যুদ্ধ শেষে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র খাদ্য, খনিজ পদার্থ ও শিল্পে স্বয়ং সম্পূর্ণ হওয়ার পর পণ্যের বিনিময়ে নগদ অর্থ দাবী করা শুরু করেছিল। আর ইউরোপ এই অর্থ পরিশোধ করেছিলো জার্মানির কাছ থেকে পাওয়া ক্ষতিপূরণের অর্থে। জার্মানি আবার এই বিপুল অর্থ ঋণ নিয়েছিল খোদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছেই! এ যেন এক ঋণের দুষ্টচক্র । গত শতাব্দীর বিশের দশকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রায় ১ বিলিয়ন ডলারের ওপর জার্মানিকে ঋন দিয়েছিল।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধঃ (World War II)
মানবসভ্যতার ইতিহাসে এযাবতকালে সংঘটিত সর্ববৃহৎ এবং সবচেয়ে ভয়াবহ যুদ্ধ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ যা ১৯৩৯ সাল থেকে ১৯৪৫ এই ৬ বছর ধরে চলে। এ যুদ্ধে মিত্রপক্ষে ছিল যুক্তরাজ্য (UK), ফ্রান্স (France), পোল্যান্ড (Poland) এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন (Soviet Union)। অন্যদিকে অপর পক্ষে ছিলো জার্মানি (Germany), ইটালি (Italy), জাপান (Japan)। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের মত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধেও নিরপেক্ষ অবস্থানেই থাকতে চেয়েছিল আমেরিকা (America)। এ যুদ্ধেও উভয় পক্ষের মাঝে অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম বিক্রি করাই ছিল তাদের উদ্দেশ্য। কিন্তু ঘটনা চক্রে শেষমেশ আমেরিকাও যুদ্ধে জড়িয়েই যায়। কিন্তু যুদ্ধ শেষ হবার পর দেখা যায় প্রতিটি দেশই খুব বাজে ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শুধুমাত্র আমেরিকা ছাড়া। তাদের গায়ে যুদ্ধের কোন আঁচই লাগেনি। বরং তাদের অর্থনীতি ফুলে ফেঁপে উঠে।
যুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্র তার মিত্র রাষ্ট্রগুলোর কাছে যে অস্ত্র বিক্রি করেছিলো তা করেছিলো স্বর্ণের মাধ্যমে। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বিপুল স্বর্ণ মজুদ হতে থাকে। ফলে বিশ্বের মোট স্বর্ণের মজুদের ৭0 ভাগ চলে যায় আমেরিকার কাছে। যার কারণে পরবর্তীতে বিশ্বব্যাপী অর্থের বিনিময় মূল্য নির্ধারিত হতে থাকে মার্কিন মুদ্রা ডলারের মাধ্যমে। এভাবেই পরবর্তী প্রতিটি যুদ্ধ থেকেই আমেরিকা নিজের পকেট ভারি করে চলেছে।
কিভাবে?
আপনারা নিশ্চয় এতক্ষনে বুঝে গিয়েছেন যে ,আমেরিকাই শুরু থেকে প্রকৃত লাভবান প্রতিটি যুদ্ধ থেকে। এখন কথা হচ্ছে কিভাবে তারা আসলে এই লাভটা করে থাকে? আমরা জানি যে, কোন যুদ্ধ হবার পেছনে কারণ হিসেবে থাকে কোন অঞ্চলের সম্পদের দখলদারিত্ব অর্জন অথবা ভৌগোলিক আধিপত্য বিস্তার। কিন্তু এগুলো পাওয়ার জন্য কি যুদ্ধে জড়িয়ে যাওয়াটা এতটাই জরুরী? শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমেই এগুলোর সঠিক সমন্নয় করা যায়। এবং এখানেই মূল বিষয় সামনে চলে আসে । শান্তির পথে কেউ হাটতে চাইলেও তা সম্ভব হয়ে ওঠে না । এটি বোঝার জন্য আপনাকে আগে বুঝতে হবে যুদ্ধের আসল উদ্দেশ্য, ব্যবসা!! হ্যা ব্যবসাই হচ্ছে প্রকৃত কারন । ব্যবসায় যেমন অংশিদারিত্ব থাকে আর সেই অংশীদারদের মুনাফা অর্জন করাই ব্যবসার মূল উদ্দেশ্য, তেমনি যুদ্ধের ক্ষেত্রেও এটাই হয়ে আসছে।
প্রতিটি যুদ্ধে ৩ টি পক্ষ থাকে। প্রথম পক্ষ যুদ্ধে লিপ্ত থাকে আর দ্বিতীয় পক্ষ থাকে সহযোগী হিসেবে। এরপর আসে তৃতীয় পক্ষ, যারাই হচ্ছে মূলত আসল সুবিধাভোগি । যুদ্ধের সময়কাল নির্ধারণ করে থাকে কিন্তু তারাই। যুদ্ধ , যেমন ধরুন বর্তমান রাশিয়া – ইউক্রেন যুদ্ধরত দুই পক্ষ। আর আমেরিকা আছে সহযোগী পক্ষ হিসেবে। এ যুদ্ধে আমেরিকা ইউক্রেন কে উসকে দিয়ে রাশিয়ার সাথে এক অসম যুদ্ধে জড়াতে প্ররোচিত করে। এরপর সহযোগী দেশ হিসেবে ইউক্রেনকে অস্ত্র সাপ্লাই দিচ্ছে। যা ইউক্রেন তাদের কাছ থেকে কিনে নিচ্ছে। যদিও শুধু ইউক্রেনের কাছেই অস্ত্র বিক্রি করাটা মূল উদ্দেশ্য ছিল না। আমেরিকার উদ্দেশ্য ছিলো আরও গভির । গত প্রায় দুই দশক সম্পদশালী ইউরোপ আমেরিকা হতে কার্যত কোনো অস্ত্র ক্রয় করেনি। কারণ ইউরোপীয়রা মনে করেছে যুদ্ধ-সম্ভাবনা পৃথিবীতে আর নেই। আর থাকলেও সেটা ইউরোপ এর বাইরেই থাকবে। এর মধ্যেই রাশিয়া অস্ত্র বিক্রিতে প্রথম স্থান দখল করে ফেলে। যা আমেরিকাকে চিন্তায় ফেলে দেয়।
ইউক্রেন যুদ্ধ ইউরোপকে আরেকবার প্রায় যুদ্ধ সম্ভাবনার দ্বারে পৌঁছে দিয়েছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যক্ষ মদদে পশ্চিমা প্রচার মাধ্যম জনমত এমন এক স্তরে নিয়ে গিয়েছিল যেখানে অধিকাংশ মনে করা শুরু করে যে রাশিয়া ইউক্রেন পুরোটা দখলে নিয়ে প্রথমে তার পুরনো সোভিয়েত ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠা করবে। এরপর পূর্ব ইউরোপ দখল অভিযানে নামবে। তারপর বাকি ইউরোপ। এভাবে আমেরিকা গোটা ইউরোপ কে রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্রভাবিত করে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করাতে চেয়েছিলো। আর সেটা যদি হতো তবে এর মাধ্যমে আমেরিকা যে ব্যবসায়িক লাভবান হতো তা অকল্পনীয়। কিন্তু সচেতন ইউরোপ এবার আর আমেরিকার ফাঁদে পা দেয় নি। সে যাই হোক, এটা ছিল আমেরিকার সহযোগী দেশ হিসেবে ভুমিকা পালন করে লাভবান হওয়া।
১৯৮০ সাল থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত চলতে থাকা ইরান – ইরাক যুদ্ধের কথা যদি আমরা বলি, তবে, সেখানে সহযোগী দেশ হিসেবে ইরাকের পাশে ছিলো আমেরিকা, সৌদিআরব, কুয়েত। অন্যদিকে ইরানের পাশে ছিলো ইজরাইল। এখানে দ্বিতীয় পক্ষ অর্থাৎ সহযোগী পক্ষ ছিল আমেরিকা, ইসরাইল, কুয়েত এবং সৌদিআরব। তাহলে তৃতীয় পক্ষ কে ছিলো? অবশ্যই আমেরিকা! কিভাবে? খুবি সাবধানতার সাথে, পরিকল্পনা মাফিক আমেরিকা এই তৃতীয় পক্ষের কাজটি করে যাতে গোটা বিশ্ব কিছুতেই বিষয়টি আঁচ করতে না পারে। যেমন ইরান-ইরাক যুদ্ধে ইজরাইল যে অস্ত্র ইরান কে দিচ্ছিলো তা কিন্তু ইসরাইলের তৈরি ছিল না। কারণ সে সময় ইসরাইলের সাথে আমেরিকার একটি চুক্তি হয়েছিলো যে ইজরাইল ইরানকে কোন অস্ত্র সাপ্লাই দিতে পারবে না। কিন্তু এখন ইরানের কাছে যদি কোন অস্ত্রই না থাকে তাহলে যুদ্ধ চালিয়ে নিয়ে ইরাকের কাছ থেকে অস্ত্র বিক্রি বাবদ অর্থ কিভাবে উপার্জন করবে আমেরিকা?
আর এখানেই একটি সুচারু চাল দিয়েছিল আমেরিকা এবং ইজরাইল। আমেরিকা ইজরাইলের সাথে গোপনে একটি অনানুষ্ঠানিক জোট তৈরি করে যার মাধ্যমে ইজরাইল আমেরিকার মধ্যে একটি কোম্পানি তৈরি করে যেটি আসলে আমেরিকার কাছ থেকে অস্ত্র কিনে তা ইরান কে সরবরাহ করা হচ্ছিল। অর্থাৎ আমেরিকা পরোক্ষভাবে ইরানকেও অস্ত্র সরবরাহ করে যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করছিলো এবং উভয় পক্ষ থেকেই অর্থ উপার্জন করেছিল। ওন্য দিকে শেভরন (CHEVRON CORP.),এবং এক্সনমোবিন (ExxonMobil) ইরান-ইরাক দুই দেশেই তেল এবং গ্যাস সাপ্লাই করে যেগুলো মূলত আমেরিকান কোম্পানি। সর্বশেষ যে বিষয়টি সেটি হলো, USAID এজেন্সি ইরান-ইরাক দুই দেশেই খাবার, পানীয় এবং মেডিসিন সাপ্লাই দেয়।দেখলেন তো কিভাবে তারা যুদ্ধবস্থায় প্রোফিট গেইন করে। এরপর আবার শুরু হয় যুদ্ধ পরবর্তী পুর্নবাসন। যার জন্য আমেরিকান কোম্পানি HELLIBURTON উভয় দেশকে সহযোগিতা করতে এগিয়ে আসে। একইভাবে আমেরিকা ইউনাইটেড হেলথ কে যুদ্ধ পরবর্তী মেডিকেল সাপোর্ট দেয়ার কাজটি ও দিয়ে দেয়।
পরবর্তীতে আবার যখন যুদ্ধের কারণে দুটি দেশই স্বাভাবিকভাবে অর্থনৈতিকভাবে ভেঙ্গে পড়ে, তখন তারই সুযোগ নিয়ে আমেরিকান কোম্পানিগুলো সে দেশের প্রাকৃতিক সম্পদের উপর বিনিয়োগ করে, এবং এমন পরিস্থিতি তৈরি করে, এরপর দেশগুলো আরও বেশি কোম্পানিগুলোর উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে।
এবার যদি আমরা ২০০৬ ও ২০১১ সালের ইরাক ও লিবিয়ার যুদ্ধের দিকে তাকাই তাহলে দেখি যে, এর পেছনেও ছিল আমেরিকার হাত। এবার কিন্তু উদ্দেশ্য ইরাক ও লিবিয়ার তেল বাণিজ্য। যুদ্ধ শেষে সাদ্দাম হোসেনের (Saddam Hussein) ও গাদ্দাফির (Muammar Gaddafi) করুণ মৃত্যুর মাধ্যমে ইরাক ও লিবিয়ায় গাদ্দাফি শাসন যাদের ক্ষমতায় বসানো হয় তারা দেশটির স্বার্থ বিকিয়ে তেলের একক ইজারাদারি একমাত্র মার্কিন কোম্পানিগুলোকে সপে দেয়।
তবে ব্যতিক্রম ও আছে। সব যুদ্ধই সফলতা নিয়ে আসে না। কিছু যুদ্ধের জন্য আমেরিকা সহ তার সহযোগী দেশগুলো কে দিতে হয়েছে চরম মুল্য। টাকার অংকে যা চোখ কপালে তোলার মত। যেমন, ইরাক এবং আফগানিস্তান যুদ্ধ। ইরাক যুদ্ধে পুতুল সরকার বসিয়ে তেলের কতৃত্ব আমেরিকান কোম্পানি গুলোর হাতে গিয়েছিলো। কিন্তু আফগান যুদ্ধ আমেরিকাকে চরমভাবে ভুগিয়েছে। বিশ বছর ধরে চলা এ যুদ্ধে আমেরিকার খরচ হয় প্রায় ২.২৬১ ট্রিলিয়ন ডলার। কিন্তু এই খরচ এখানেই শেষ হবে না। আগামী ২০৫০ সাল পর্যন্ত এ ব্যয় যুক্তরাষ্ট্রকে বয়ে নিয়ে যেতে হবে। কেননা এই অর্থের বেশীরভাগই ছিল ঋন যার সুদ বাবদ ৫০ সাল পর্যন্ত খরচ হবে ৬.৫ ট্রিলিয়ন ডলার। ইরান ও আফগানিস্তান যুদ্ধ আমেরিকার অর্থনীতিকে অনেকটাই দুর্বল করে দেয়।
কিন্তু সব যুদ্ধেই আসল লাভবান হয়েছে চিরাচরিত অস্ত্র ব্যবসায়ীরাই। যেমন, শুধুমাত্র আফগানিস্তানে মার্কিন সেনা বাহিনীর সিংহভাগ অস্ত্র সরবরাহক পাঁচটি প্রতিরক্ষা কোম্পানি- লকহিড মার্টিন (Lockheed Martin), বোয়িং কো.(Boeing co.), জেনারেল ডাইনামিক্স কর্প (General Dynamics Corp), রেথিওন টেকনোলজিস (RTX Corporation) এবং নরথ্রুপ গ্রুম্যান কর্পের (Northrop Grumman Corporation) পকেটে গেছে সবচেয়ে বড় অঙ্কের অর্থ। অস্ত্র, রসদ ও অন্যান্য পরিষেবা বাবদ তারা সরাসরি আয় করেছে ২ লাখ ১০ হাজার কোটি ডলার। আর এভাবেই প্রতিটি যুদ্ধের পিছনে সু-পরিকল্পিতভাবে হাসিল হয়ে আসছে তাদের ব্যবসায়িক উদ্দেশ্য। রক্তের হোলিখেলায় বেশিরভাগ লাভবান হয়েছে শুধু অস্ত্র উৎপাদক, সরবরাহক ও ঠিকাদাররা।
কেমন লাগলো আমাদের আজকের ব্লগটি? কমেন্টে অবশ্যই জানাতে ভুলবেন না। ভালো লাগলে লাইক দিন, সাথে সাবস্ক্রাইব করুন নিউজলেটার ও শেয়ার করুন আপনার বন্ধুদের সাথে।