শেল পেট্রোলিয়াম এর বিষাক্ত থাবা | How an oil giant poisons the whole country
একটা কোম্পানি এতো শক্তিশালী হতে পারে যে সে একটা পুরো দেশকে ধ্বংস করে দিতে পারে? কীভাবে সেই দেশের জমি, নদী এমনকি খাবার পানিতেও নিজের বিষাক্ত থাবা ছড়িয়ে দিতে পারে? এমনি এক কোম্পানির বিষাক্ত থাবায় ধ্বংস হওয়ার পথে নাইজেরিয়া। শুধুমাত্র এই একটি কোম্পানির জন্য সেই দেশের জন্ম নেওয়া ৫০ % শিশু জন্মের আগে মারা যায় এবং যদি বেঁচেও থাকে তাও বিকলাঙ্গ অবস্থায়। নাইজেরিয়ার উপর নিজের বিষাক্ত থাবা দিয়ে রেখেছে শেল কোম্পানি। কিন্তু কেন, কীভাবে? এই প্রশ্নের উত্তর জানার আগে এই কোম্পানির ইতিহাস সম্পর্কে জানা যাক।
১৮৩৩ সালে লন্ডনের এক ব্যবসায়ী মার্কাস স্যামুয়েল সি শেলের আমদানি–রপ্তানি করতো। এর চাহিদা এতোই বেশি ছিল যে স্যামুয়েল দূর প্রাচ্য থেকে শেল আমদানি করা শুরু করে। পরে ১৮৭০ সালে স্যামুয়েল মারা যাওয়ার পর তার দুই ছেলে মার্কাস জুনিয়র ও স্যামুয়েলের হাতে পুরো ব্যবসার দায়িত্ব চলে যায়। ১৮৮০ সালে তারা তেল রপ্তানির ব্যবসায় বিশেষ ভাবে আগ্রহী হয়ে ওঠে।বড় ছেলে মার্কাস কেরোসিন তেল রপ্তানি করার কাজ শুরু করে। তখন তেল ব্যারেলে বহন করা হতো। আর এই ব্যারেল ছিদ্র হয়ে অনেক তেল অপচয় হতো। এই সমস্যার সমাধানের জন্য মার্কাস স্টিমারের একটি বহর চালু করে এবং ১৯৮২ সালে এই স্টিমারের মাধ্যমে সুয়েজ খালের মধ্য দিয়ে প্রথম কোনো তেলের ট্যাঙ্কার ইউরোপ থেকে এশিয়া যায়। প্রথম সমুদ্রযাত্রায় স্যামুয়েল ভাইয়েরা তেল পরিবহনের একটি বিপ্লব অর্জন করে।ওই সময় আরো একটি তেলের কোম্পানি ছিল যারা তেল রপ্তানি করতো কোম্পানিটি হলো স্ট্যান্ডার্ড। স্ট্যান্ডার্ড কোম্পানি শুধু ইউরোপ পর্যন্ত তেল রপ্তানি করতো।যখন তারা জানতে পারে মার্কাস তার তেল ট্যাঙ্ক নিয়ে এশিয়া গিয়েছে তখন স্ট্যান্ডার্ড কোম্পানি মার্কাসকে প্রস্তাব দেয় সে যেন স্ট্যান্ডার্ড কোম্পানির তেলও এশিয়ায় সরবারহ করে এবং এর বদলে স্ট্যান্ডার্ড কোম্পানি থেকে কমিশন নিবে। তখন মার্কাস ভাবলো অন্য কোম্পানির জন্য কাজ না করে নিজের তেলের কোম্পানি তৈরি করে তেল সরবরাহ করে বেশি লাভবান হওয়া যাবে। কিন্তু তখন স্ট্যান্ডার্ড কোম্পানির বিরুদ্ধে নিজের কোম্পানি খোলা, মানে তার বিরোধিতা শুরু করা। ১৮৯৭সালে মার্কাস এবং স্যামুয়েল শেল ট্রান্সপোর্ট অ্যান্ড ট্রেডিং কোম্পানি নামে তাদের নিজস্ব কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করে এবং ডাচ বোর্নিওর বালিক পাপানে তাদের প্রথম শোধনাগার চালু করেন।শেল কোম্পানিটি দ্রুত আমেরিকান স্ট্যান্ডার্ড অয়েলের শীর্ষস্থানীয় প্রতিযোগী হয়ে ওঠে এবং ১৯২০ সাল নাগাদ শেল ছিল বিশ্বের বৃহত্তম তেল উৎপাদনকারী। শেল মূলত তার কৌশলগত একীভূতকরণ এবং অধিগ্রহণ, তেল ও গ্যাসের অনুসন্ধান ও উৎপাদন এবং শক্তি শিল্পের অন্যান্য ক্ষেত্রে বৈচিত্র্য সহ বিভিন্ন কারণের সমন্বয়ের মাধ্যমে বিশ্বের বৃহত্তম তেল কোম্পানিতে পরিণত হয়।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে শেলের ভূমিকা
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়, শেল ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর প্রধান জ্বালানি সরবরাহকারী হয়ে ওঠে এবং মুরেক্স সহ ব্রিটিশ অ্যাডমিরালদেরকে তার সমস্ত জাহাজ অফার করে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে, শেলের লন্ডন অফিস যুদ্ধের প্রচেষ্টাকে সমর্থন করার জন্য নিবেদিত ছিল এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানির শোধনাগারগুলি মিত্রবাহিনীর বিমান বাহিনীকে সমর্থন করার জন্য বিমানের জ্বালানী তৈরি করেছিল।
ঐতিহাসিক পটভূমিঃ
যুদ্ধ-পরবর্তী বছরগুলি শেলের জন্য ছিল সবচেয়ে কঠিনতম।পুনর্গঠন খুব ব্যয়বহুল ছিল এবং তেলের বাজার দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছিল। মার্কাস তখন এমন দেশ খুঁজছিল যেখানে তেলের অনেক বড় মজুদ রয়েছে পাশাপাশি দেশটি যেন দারিদ্র্য দুর্দশা সম্পন্ন হয়। তার এই শর্ত পূরণের জন্য তখন তার চোখে আসে আফ্রিকার একটি দেশ নাইজেরিয়া।আফ্রিকার সবচেয়ে বেশি তেল মজুদ ছিল নাইজেরিয়াতে। শেল নাইজেরিয়ার সরকারের সাথে অংশীদারিত্ব করে যেন তার বিলিয়ন লাভের মধ্যে কেউ না আসতে পারে। ১৯৩৬ সালে শেল নাইজেরিয়াতে শেল ডি’আর্সি প্রতিষ্ঠা করার মাধ্যমে নাইজেরিয়ার বাজারে প্রবেশ করে। শেল নাইজেরিয়াতে ১৯৩৭ সালে থেকে সক্রিয় হয় এবং দেশটিতে কর্মরত সমস্ত আন্তর্জাতিক তেল ও গ্যাস কোম্পানিগুলির মধ্যে সবচেয়ে বড় পদচিহ্ন রাখে।
শেলের অপারেশন ব্যাপ্তিঃ
১৯৩৬ সালে শেল ডি’আর্সি প্রতিষ্ঠার সাথে শুরু করে কয়েক দশক ধরে ধীরে ধীরে নাইজেরিয়ায় প্রসারিত হতে থাকে।
১৯৩৮ সালে শেল ডি’আর্সিকে নাইজেরিয়া জুড়ে তেলের সম্ভাবনার জন্য অনুসন্ধান লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল। ১৯৫৬ সালে শেল ডি’আর্সি দ্বারা নাইজেরিয়ায় প্রথম সফল কূপ খনন করে। একই বছর শেল নাম পরিবর্তন করে শেল-বিপি পেট্রোলিয়াম ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি অফ নাইজেরিয়া লিমিটেড নামকরণ করে। এরপর ১৯৫৮ সালে শেল প্রথম নাইজেরিয়া থেকে তেলের চালান করে।১৯৬১ সালে নাইজেরিয়ায় শেলের বনি টার্মিনাল চালু করা হয়েছিল। ১৯৯৮ সালে শেল নাইজেরিয়াতে গ্যাস কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করে।শেল নাইজেরিয়া গ্যাস ৮৫ টি শিল্পকে প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহ করে।
আন্দোলন আর প্রতিবাদঃ
শেল সব জায়গা তেলের জন্য খনন করে রাখে যার কারণে সব জমি নদীতে তেল ছড়িয়ে পড়ে। নাইজেরিয়ার কৃষকরা ক্ষেতে যেতে ভয় পেত যেন তাদের একটু ভুলের জন্য পুরো ফসল যেন জ্বলে না যায়। সেখানকার নদীতে পানি কম আর তেল বেশি ছিল। মানুষ পানির জন্য কোনো কুয়ো করলেও সেখান থেকে পানির বদলে তেল পাওয়া যেত। পান করার জন্য তারা বিশুদ্ধ পানি পেতনা। তেলের কারণে সেখানকার সকল মানুষের মধ্যে ক্যান্সার মহামারী মতো ছড়িয়ে পরতে থাকে।এমন এমন রোগ ছাড়াতো যে রোগের কথা আগে কেউ কোনোদিন শুনেও নি। কিন্তু এই সবকিছু দায়ভার শেল নিতে নারাজ।
একবার একটা তেলের পাইপলাইন ফেটে নাইজার নদীতে ৪০ হাজার ব্যারেল তেল নদীর পানির সাথে মিশে যায়।এই ঘটনার কারণে সেখানকার ৩০ হাজার জেলে এবং ৩৫০ জন কৃষকের কাজ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত নাইজার নদীর পাশে থাকা যতো মহিলা সন্তান জন্ম দেয় তাদের মধ্যে ৫০ % বাচ্চা জন্মের আগেই গর্ভে মারা যায়। আর যদি বেঁচে থাকে তাহলে তাদের মধ্যে অবশ্যই কোনো বিকলাঙ্গতা থাকে। শেলের কারণে নাইজেরিয়ায় সকল নদীতে তেল ছড়িয়ে পড়ার কারণে সেখানে মাছ চাষ প্রায় বন্ধের পথে। ১৯৯০ সালে নাইজেরিয়ার মানুষ শেলের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়, আন্দোলন করা শুরু করে।কিন্তুু নাইজেরিয়ার সরকার শেলের পক্ষে ছিল। নাইজেরিয়ার সরকার শেলের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীদের আর্মিদের দিয়ে দমন করার চেষ্টা করে।আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী অনেকের উপর গুলিও চালানো হয়। শেল জনগণের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকে দমন করার জন্য “নিরাপত্তা সুরক্ষা” অনুরোধ করেছিল এবং পরের দুই দিনের মধ্যে, পুলিশ বন্দুক এবং গ্রেনেড দিয়ে একটি ওগনি গ্রামে আক্রমণ করে, কমপক্ষে ৮০ জনকে হত্যা করে এবং প্রায় ৬০০ টি বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়। তারপরও আন্দোলন থামেনি। শেল শুধু সরকারকে না সেখানকার আর্মিদের অনেক অর্থ প্রদান করত।শেল টাকা দিয়ে সবার মুখ বন্ধ করে দিয়েছিল। সবাই শেলের কন্ট্রোলে থাকলেও একজন লোক ছিলনা সে হলো ken saro-wiwa। তিনি একজন নাইজেরিয়ান রাইটার ও পরিবেশগত কার্যকলাপে সংযুক্ত ছিলেন। তিনি শেলের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা শুরু করে্ন। তিনি স্কুল থেকে শুরু করে কলেজ হাসপাতাল সবজায়গায় ক্যাম্পিং করে বোঝাতে থাকেন কীভাবে শেল তাদের সবার জীবন ধ্বংস করে দিচ্ছে। ক্যানের একটাই উদ্দেশ্য ছিল যেন শেল নাইজেরিয়া ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়।
শেল ক্যানকে টাকা দিয়ে কিনতে অনেক চেষ্টা করেছে কিন্তুু প্রত্যেকবার তারা ব্যর্থ হয়েছে। আর ক্যানের ছিল অভাবনিয় জনপ্রিয়তা যার কারণে শেল ক্যানের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারছিলনা। ক্যান তার লোকদের নিয়ে শেলে কাজ করা সকল ইন্জিনিয়ারদের ভয় দেখায় যেন তারা নাইজেরিয়া ছেড়ে চলে যায়। শেলের লোক নাইজেরিয়ান ইন্টেলিজেন্সদের সাথে নিয়ে ক্যানের বিরুদ্ধে একটি প্ল্যান করে, ক্যানের গ্রামের চারজন প্রধান ব্যক্তিদের হত্যা এবং এর দায়ভার ক্যান ও তার সাথীদের উপর চাপিয়ে দেয়।আর গ্রামের কিছু লোকদের টাকা দিয়ে ক্যানের বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষী দেওয়ানো হয়। এর ফলে ১৯৯৬ সালে ১০ নভেম্বর ক্যান ও তার ৭ জন সঙ্গীকে ফাঁসি দেওয়া হয়।এর মাধ্যমে শেল সকলকে বুঝিয়ে দেয় যারাই শেলের বিরুদ্ধে যাবে তাদের সকলেরই এমন পরিনতি হবে। শেলের বিরুদ্ধে নাইজেরিয়ায় আন্দোলন এখনও চলছে। সেখানে রীতিমতো জনগন ও সরকার একে অপরের বিরুদ্ধে লড়াই করছে আর এই লড়াই এর মধ্য থেকে লাভবান হচ্ছে শেল।
অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রভাবঃ
শেল নাইজেরিয়ার অর্থনীতিতে একটি উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছে। নাইজেরিয়ায় শেল কোম্পানি ২৫০০ জন সরাসরি এবং দশ হাজারেরও বেশি ঠিকাদার নিয়োগ করে। ২০২১ সালে নাইজেরিয়ার শেল নাইজেরিয়ান-নিবন্ধিত কোম্পানিগুলিকে ৮০০ মিলিয়ন ডলার মূল্যের চুক্তি প্রদান করে। এরপর ২০২২ সালে শেল পেট্রোলিয়াম ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি যৌথ উদ্যোগে শেল নাইজেরিয়া এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন ও শেল নাইজেরিয়া গ্যাস নাইজেরিয়ান-নিবন্ধিত কোম্পানিকে ১.৯ বিলিয়ন ডলার মূল্যের চুক্তি প্রদান করে।
তেল খাত নাইজেরিয়ার বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের 88% অবদান রাখে, শেল নাইজেরিয়ার বৃহত্তম তেল অপারেটর যা দেশের মোট তেল উৎপাদনের 39% ।
২০১০ সালে আল-জাজিরার একটি নিবন্ধে উইকিলিকসের ফাঁস হওয়া নথির মাধ্যমে জানা যায় শেল নাইজেরিয়ায় নীতি নির্ধারনে প্রভাব অর্জনের জন্য প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ সরকারি মন্ত্রণালয়ে নিজেদের কর্মচারী গোপনে অন্তর্ভুক্ত করেছে। এছাড়াও শেল নিজের কোম্পানি নাইজেরিয়াতে প্রতিষ্ঠার পূর্বে সেখানকার প্রধানমন্ত্রীকে ৩০০ মিলিয়ন ডলার দিয়েছিল।
পরিবেশগত ক্ষতি, মানবাধিকার লঙ্ঘন, এবং রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের অভিযোগ সহ নাইজেরিয়ায় শেল জড়িত, আদালতের মামলাগুলি বহু বছর ধরে চলছে।
২০২৩ সালে, ডাচ আদালত একটি রায় দেয় যে শেল নাইজেরিয়া, নাইজার নদিতে তেল ছড়িয়ে পড়ার জন্য দায়ী।
২০১৭ সালে ক্যানকে মিথ্যা মামলায় জাড়ানোর জন্য শেলের মাত্র ১৫ মিলিয়ন ডলার ফাইন করা হয়। আইনি জটিলতার কারণে শেলের কোনো ক্ষতি হয়নি।শেল এখনও একই রকম ভাবে নিজেদের ধ্বংসলীলা নাইজেরিয়ার লোকেদের উপর চালিয়ে যাচ্ছে।
সরকারের সাথে শেল এর সম্পর্কঃ
এখন প্রশ্ন হলো এতোকিছুর পরেও কেন সরকার শেলের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না? যেখানে তার নিজ দেশের জনগন শেল জন্য প্রায় ধ্বংসের পথে,পুরো একটি জাতি যেখানে ধ্বংসের পথে তাও কেন সরকার চুপ করে বসে রয়েছে?
নাইজেরিয়ার সরকার শেল এর টাকায় এমন ভাবে বিক্রি হয়ে গেছে যে তাদের নিজ দেশের জনগণের সমস্যাগুলো চোখে পড়ছেনা।শেল ১.৩ বিলিয়ন ডলারের জমি নাইজেরিয়ার মন্ত্রী ও বড় বড় আর্মি অফিসারদের গিফ্ট করে।যেহেতু নাইজেরিয়ার সরকার শেল আসার আগে তেলের রিজার্ভের প্রোফিট তুলতে পারছিলনা এবং তেল উত্তোলনের জন্য যথেষ্ট বিনিয়োগের অর্থও তাদের কাছে ছিলনা তাই তারা শেলের মাধ্যমে লাভ করার লোভে শেলের বিরুদ্ধে কিছু বলছেনা। পাশাপাশি নাইজেরিয়াতে শেল আসার কারণে নাইজেরিয়ায় বিপুল পরিমানে বৈদেশিক মুদ্রা আয় হচ্ছিল যার কারণে নাইজেরিয়ার অর্থনীতি আরো মজবুত হচ্ছিল।বর্তমানে নাইজেরিয়ায় শেল অয়েল প্রোডাকশনের ৪০% কন্ট্রোল করে আর এই দেশের ৭০% ফরেন exchange এই কোম্পানির কারণে হচ্ছে। যদি নাইজেরিয়ার সরকার শেলের সাথে নিজেদের চুক্তি ভেঙে দেয় তাহলে তাদের পুরো তেল ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে আর নাইজেরিয়ায় তেল রপ্তানির জন্য যে বৈদেশিক মুদ্রা আসতো তাও বন্ধ হয়ে যাবে। আর তাতে নাইজেরিয়ার অর্থনৈতিক অবস্থায় অনেক বিরুপ প্রভাব ফেলবে।
শেল এখনও একই রকম ভাবে নিজেদের ধ্বংসলীলা নাইজেরিয়ার লোকেদের উপর চালিয়ে যাচ্ছে। একটা কোম্পানি শুধুমাত্র নিজের স্বার্থের জন্য পুরো একটি দেশকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। তাহলে কী সব ইউরোপিয়ান কোম্পানিগুলো এমন হয়? শুধুমাত্র একটা কোম্পানি টাকার জোড়ে সেই দেশের সরকারকে কিনে প্রতিনিয়ত নির্বিচারে সেই দেশকে ধ্বংস করে দিবে? নাইজেরিয়া কী কখনও শেলের হাত থেকে মুক্তি পাবেনা?
নাইজেরিয়ায় শেলের এই বৃহত্তর প্রভাব সম্পর্কে আপনাদের কী চিন্তাভাবনা তা অবশ্যই আমাদের কমেন্ট করে জানাবেন। ভালো লাগলে সাবস্ক্রাইব করুন নিউজলেটার।