Lockheed Martin -যে কোম্পানির কাছে বাঁধা পড়েছে আমেরিকা!
সুচনা
সামরিক শক্তির কথা যদি তোলা হয়, তাহলে বর্তমান বিশ্বে ইউএসএ (USA) বা আমেরিকার আগে আর কোনও দেশ নেই। হ্যা, কিছু সময় চীন(China), রাশিয়া(Russia) অথবা ভারতের(India) নাম সামনে চলে আসে এই আলোচনায়। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, এই সবগুলো দেশের সামরিক বাজেট এক করলেও, আমেরিকার এক বছরের মিলিটারি বাজেটের অংক ছুতে পারবে না! প্রতিবছর কয়েকশো বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র কিনতে হয় এই দেশটিকে। অন্যদিকে বিশ্ব রাজনীতিতে অস্থিতিশীল পরিবেশ, মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা এবং সাউথ আমেরিকার মধ্যে তৈরি হওয়া যুদ্ধ পরিস্থিতি, সব মিলিয়ে বর্তমান বাজারে অস্ত্র বিক্রির হিড়িক লেগে গেছে। তাই স্বাভাবিকভাবেই বলা যায়, অস্ত্র ব্যবসা অতীতের সকল রেকর্ড ভেঙ্গে দিয়ে এখন রমরমা অবস্থাতেই আছে। কিন্তু কেমন হয়, যদি বলি এই রমরমা ব্যবসাতেও মনোপলি নিয়ে বসে আছে একটামাত্র কোম্পানি! যদি বলি, সারা বিশ্বের অস্ত্রের জোগানদাতা হিসেবে কয়েকটি নয়, মাত্র একটি কোম্পানির নামই চলে আসবে সবার আগে! এটি এমন এক কোম্পানি, যাকে রীতিমতো ‘আমেরিকার ডানহাত’ হিসেবে দেখা হয়! আজ আমরা কথা বলবো পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী এবং বৃহত্তর অস্ত্র নির্মাণ প্রতিষ্ঠান, লকহিড মার্টিনকে(Lockheed Martin) নিয়ে।
লকহিড এবং মার্টিন, দুই কিংবদন্তীর যাত্রা
কাগজে কলমে লকহিড মার্টিনের বয়স মাত্র ২৮ বছর হলেও, এর ইতিহাসের প্রথম পাতা রচিত হয়েছিলো বিংশ শতাব্দীর প্রথমদিকে। একদিকে দুই ভাই এলেন লকহিড এবং ম্যালকম লকহিড সাধারণ জনগণের জন্য উড়োজাহাজ বানানোর কাজ করছিলেন ১৯১২ সালে, অন্যদিকে মিলিটারি ট্রেইনিং এর জন্য প্লেন বানানোর মাঠে একইবছর নেমে যান আকাশপথের খ্যাতিমান ব্যক্তিত্ব গ্লেন মার্টিন। দুজনের যাত্রাই আলাদা পথে শুরু হয়েছিলো, কিন্তু তখন কে জানতো, প্রায় এক শতক পর এই দুই ব্যক্তির প্রতিষ্ঠান অস্ত্র ব্যবসায় একচ্ছত্র আধিপত্যের অধিকারী হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করবে?
এলেন এবং ম্যালকম লকহিড তাদের লকহিড এয়ারক্রাফট ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি বেশ ভালোভাবেই এগিয়ে নিচ্ছিলেন। কিন্তু ১৯২০ এর বন্যা এবং প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ধাক্কায়, কোম্পানি বন্ধ করে দিতে হয় এই দুই ভাইকে। কোম্পানি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর ম্যালকম অটোমোবাইল ইন্ডাস্ট্রিতে ঢুকে যান, কিন্তু এলেন লকহিড তার উড়োজাহাজের স্বপ্ন ত্যাগ করতে পারেন না। তাই ফ্রেড কিলার, কেনেথ কেই এবং জন নর্থরোপ নামের তিনজন ব্যক্তিকে নিয়ে, এলেন লকহিড আবার তার কার্যক্রম শুরু করেন। এই চারজন মিলে তৈরি করেন লকহিড এয়ারক্রাফট কোম্পানি, যার ৮৭% শেয়ার ফ্রেড কিলারের কাছে ছিলো।
অন্যদিকে মার্টিন তার মতো এগিয়ে যাচ্ছিলেন স্ব মহিমায়। আকাশপথে একের পর এক রেকর্ড নিজের নামে করে নিচ্ছেন এই ব্যক্তি। এসব গৌরবময় খ্যাতিকে কাজে লাগিয়ে তিনি ১৯১৭ সালে চালু করেন দা মার্টিন কোম্পানি। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ যেখানে লকহিডদের জন্য দুর্ভাগ্য এনে দিয়েছিলো, সেখানে দা মার্টিন কোম্পানিকে এই যুদ্ধ দেখিয়েছিলো সাফল্যের পথ। যুদ্ধবিমান নির্মানে এই প্রতিষ্ঠান বেশ দ্রুতই সফলতার মুখ দেখেছিলো।
এলেন লকহিড তার নতুন লকহিড এয়ারক্রাফট কোম্পানিতেও সফলতার মুখ দেখতে পান ১৯২৮ সালে। এই কোম্পানির তৈরি করা উড়োজাহাজ ‘ভেগা’(Vega) তুমুল জনপ্রিয়তা পায়। সেইসময়েই এই কোম্পানির ব্যবসা মিলিয়ন ডলারের অংক ছুয়ে ফেলেছিলো। অবস্থা এমন ছিলো যে, প্রতি সপ্তাহে ৫ টি করে উড়োজাহাজ বানানোর কাজ করতে হতো লকহিড এয়ারক্রাফট কোম্পানিকে। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস আবারও আটকে দেয় এলেন লকহিডকে। কোম্পানির সবচেয়ে বড় শেয়ারহোল্ডার ফ্রেড কিলার, তার ৮৭% শেয়ার বিক্রি করে দেন ডেট্রোয়েট এয়ারক্রাফট কর্পোরেশনের কাছে। কোম্পানির সবচেয়ে ভালো সময়ে ফ্রেড কিলারের এমন সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেননি এলেন লকহিড। তিনি তার শেয়ার বিক্রি করে দেন, এবং লকহিড এয়ারক্রাফট কোম্পানির প্রেসিডেন্টের পদ থেকে অব্যাহতি নিয়ে নেন। ১৯২৯ সালে এলেন লকহিড তার প্রত্যেকটি শেয়ার ২৩ ডলার দামে বিক্রি করেছিলেন। আর এই শেয়ার বিক্রির মাধ্যমেই লকহিড এয়ারক্রাফট কোম্পানির সাথে ব্যবসায়িক যাত্রা শেষ হয়ে যায় এলেন লকহিডের। পরবর্তীতে ডেট্রোয়েট এয়ারক্রাফট কর্পোরেশন দেউলিয়া হয়ে গেলে, লকহিড এয়ারক্রাফট কোম্পানি চলে যায় রবার্ট গ্রস এবং কোর্টল্যান্ড গ্রস নামের দুই ভাইয়ের কাছে। এলেন লকহিড এই কোম্পানির সাথে আনঅফিসিয়াল সম্পর্ক বজায় রেখেছিলেন তার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত।
লকহিড কোম্পানিকে যুদ্ধজাহাজের মার্কেটে নিয়ে যান গ্রস ব্রাদারেরা। তারাই প্রথম এই প্রতিষ্ঠানটির তৈরি যুদ্ধজাহাজ বাজারে নিয়ে আসে, যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় কোম্পানিকে লাভের মুখ দেখায়।
৬০ এর দশকে ধীরে ধীরে বদলাতে শুরু করে দা মার্টিন কোম্পানির চেহারা। ১৯৬১ সালে এই কোম্পানি আমেরিকান মারিয়েট্টা কর্পোরেশনের সাথে মার্জ করে ফেলে। মার্জিং এর আগে মার্টিন কোম্পানি উড়োজাহাজের পাশাপাশি তখন মিসাইল নির্মানের ব্যাপারেও ভাবছিলো। যদিও এর ৬ বছর আগেই মার্টিন কোম্পানি আমেরিকার দ্বিতীয় ইন্টারকন্টিনেন্টাল ব্যালাস্টিক মিসাইল তৈরি করতে সক্ষম হয়। কোম্পানির লক্ষ্য ছিলো, আমেরিকার অস্ত্র ব্যবসায় নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করা।
একত্রীকরণ এর ২ বছরের মধ্যেই নতুন কোম্পানি মার্টিন মারিয়েট্টা পারমাণবিক প্রোজেক্টে কাজ শুরু করে। ধীরে ধীরে এই কোম্পানি যেই লক্ষ্যে এগুতে চেয়েছিলো, ঠিক সেই পথেই তারা যেতে সক্ষম হয়। কয়েক দশকের মধ্যেই মার্টিন মারিয়েট্টা আমেরিকার অন্যতম প্রভাবশালী প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। এর মালিকানা পাওয়ার জন্য বেশ কয়েকবার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান একের পর এক চেষ্টা চালিয়েও ব্যর্থ হয়। ৯০ এর দশকে মার্টিন মারিয়েট্টা আমেরিকান সামরিক খাতে এক অপ্রতিরোধ্য নামে পরিণত হয়।
লকহিড মার্টিন মার্জ এবং এর সফলযাত্রা
১৯৯৫ সালে লকহিড কর্পোরেশন এবং মার্টিন মারিয়েট্টা মিলে একটি নতুন প্রতিষ্ঠানের জন্ম হয়। এই নতুন কোম্পানির নাম রাখা হয় ‘লকহিড মার্টিন’। মার্জিং এর পূর্বেই দুটি কোম্পানিই আমেরিকার অন্যতম প্রভাবশালী প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছিলো। কিন্তু ১০ বিলিয়ন ডলারের এই মার্জিং এর ফলে, নতুন প্রতিষ্ঠান লকহিড মার্টিন রাতারাতি আমেরিকার সবচেয়ে বড় মিলিটারি কন্ট্রাক্টরে পরিণত হয়। মার্জিং এর পর দুই কোম্পানির বেশকিছু শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা মোটা অংকের বোনাস পান। মার্টিন মারিয়েট্টার CEO নরম্যান আর অগাস্টিন একাই সেইসময় ৮.২ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বোনাস পান।
নতুন কোম্পানি হিসেবে লকহিড মার্টিনের ক্ষমতা এতোটাই উপরে পৌছে যায় যে, আমেরিকার সরকারকে সেই ক্ষমতার দৌড় থামানোর জন্য মাঠে নামতে হয়। আমেরিকার আরেক বৃহত্তর মিলিটারি কন্ট্রাক্টর প্রতিষ্ঠান নর্থরোপ গ্রুমম্যানের সাথেও মার্জিং এই পরিকল্পনা শুরু করে লকহিড মার্টিন। এই মার্জিং হয়ে গেলে, আমেরিকার সামরিক বাজেটের ২৫% এই একটি কোম্পানির কাছেই চলে যেতো। তাই সরকারী হস্তক্ষেপের মাধ্যমে এই মার্জিং বন্ধ করা হয়।
কিন্তু এরপরেও লকহিড মার্টিনকে আর থামানো সম্ভব হয়নি। ধীরে ধীরে সামরিক খাত ছাড়াও প্রতিষ্ঠানটি নাসার সাথেও কাজ করতে শুরু করে। এরপর আমেরিকার হেলথকেয়ার, সাইবার সিকিউরিটি, নিউক্লিয়ার সেক্টরেও লকহিড মার্টিনের কর্মকান্ড শুরু হয়, যা এই প্রতিষ্ঠানকে আমেরিকার সবচেয়ে ক্ষমতাধর একটি প্রতিষ্ঠানে পরিণত করে। তবে সামরিক খাতে এই প্রতিষ্ঠানটি পেছনে ফেলে দেয় সবাইকেই।
২০১৩ সালে লকহিড মার্টিনের লাভের ৭৮% আসে শুধুমাত্র সামরিক খাত থেকেই। ২০১৪ সালে লকহিড মার্টিন লাভাংশের অংকে শুধুমাত্র আমেরিকাই নয়, পৃথিবীর সবচেয়ে ব্যবসা সফল মিলিটারি কন্ট্রাক্টরে পরিণত হয়। এরপর শুধু আমেরিকাতেই নয়, অস্ট্রেলিয়া, ইউকের মতো দেশগুলোতেও লকহিড মার্টিনের বিশেষ বিভাগ খোলা হয়। আমেরিকার সবচেয়ে বড় সামরিক কন্ট্রাক্ট পাওয়ার জন্য লকহিড মার্টিন রাজনৈতিক দলগুলোতে লবিং এর নামে কোটি কোটি ডলার লগ্নি করতে শুরু করে। ফলাফল? টানা ১৫ বছর ধরে আমেরিকার অস্ত্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের তালিকায় লকহিড মার্টিন এক নাম্বার পজিশন দখল করে আছে। সেইসাথে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় অস্ত্র তৈরির প্রতিষ্ঠান হিসেবেও এখন লকহিড মার্টিনের নামই সবার আগে দেখতে পাওয়া যায়। বছরে প্রায় ৬০ বিলিয়ন ডলারের বেশি লাভাংশ দেখানো এই প্রতিষ্ঠানটি পেন্টাগনের সব বড় অস্ত্রের কনট্র্যাক্টগুলো দেখাশোনা করার পাশাপাশি, আমেরিকার সামরিক শক্তি বৃদ্ধির জন্য নতুন অস্ত্রের আবিষ্কারের মতো কাজও এখন লকহিড মার্টিন করে থাকে। প্রায় এক লাখ বিশ হাজার কর্মী এই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রয়েছেন, যার অর্ধেক শুধুই ইঞ্জিনিয়ার। এই বিশাল কর্মকান্ডের একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করায়, লকহিড মার্টিনকে আমেরিকান মিলিটারির ডানহাত হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।
লকহিড মার্টিনের যত কুকীর্তি
পৃথিবীর সবচেয়ে বড় অস্ত্র ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিতি পেতে লকহিড মার্টিন শুধুই পরিশ্রম আর ব্যবসায়ী চিন্তাভাবনাই কাজে লাগিয়েছে, এমন নয়। দুনিয়ার সবচেয়ে বড় ইকোনমি যেই দেশে অবস্থিত, যেই দেশ পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর মালিক, সেই আমেরিকাতে প্রভাব তৈরি করার জন্য এমন অনেক কাজ লকহিড মার্টিন করেছে, যা প্রশ্নবিদ্ধ।
রিপাবলিক এবং ডেমোক্রেটিক পার্টির বহু নেতার রাজনৈতিক বাজেটের বড় অংশ আসে লকহিড মার্টিন থেকে। এই অনুদান কিংবা উপরি যাই বলা হোক না কেন, দেয়ার পিছনে একটিই কারন থাকে এদের। আর সেটি হচ্ছে দেশের সবচেয়ে বড় মিলিটারি কন্ট্রাক্টগুলো লকহিড মার্টিনকে পাইয়ে দেয়া। এই লবিং আইনত বৈধ হলেও ইথিক্যালি এই কাজটিকে অনেকেই বেঠিক বলে মনে করেন। এভাবেই লকহিড মার্টিন তাদের সাম্রাজ্য তৈরি করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে অনেক।
এছাড়াও ছোটবড় সব অস্ত্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কিনে নেয়ার মতো কাজ করে, আমেরিকার সামরিক খাতকে লকহিড মার্টিনের উপর নির্ভরশীল করে ফেলার মতো কাজও চালিয়ে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা। সর্বশেষ ২০২২ সালে আমেরিকা মামলা মোকদ্দমার মাধ্যমে এরোজেট রকেটডাইন হোল্ডিং ইনকরপোরেশন নামের একটি কোম্পানিকে লকহিড মার্টিনের অংশ হওয়া থেকে রক্ষা করে। এরোজেট মিসাইল নিক্ষেপ করার প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করে থাকে, আর এটিই এখন এমন প্রযুক্তি আমেরিকাকে প্রদান করা কোম্পানিগুলোর মধ্যে একমাত্র উদাহরণ, যারা লকহিড মার্টিনের অধিনে কাজ করছে না। বলা হয়ে থাকে, লকহিড মার্টিন যদি দেউলিয়া হয়ে যায়, তাহলে দেউলিয়া হয়ে যাবে স্বয়ং আমেরিকাই! তাই ক্ষমতাশালী এই প্রতিষ্ঠানকে আরও ক্ষমতাবান হওয়া থেকে আমেরিকান সরকারকেই মাঠে নামতে হয়েছে।
তবে অস্ত্র ব্যবসাতে লকহিড মার্টিন আধিপত্য বাড়ানোতে এমন বাধা পাওয়ায়, তাদের ইনভেস্টমেন্টের খাতে এসেছে নতুনত্ব। বর্তমানে লকহিড মার্টিন শুধুমাত্র অস্ত্র, পারমাণবিক প্ল্যান্ট কিংবা স্পেস প্রোগ্রামেই নয়,বরং অর্থ লগ্নি করছে সাইবার সিকিউরিটি, ফায়ার সার্ভিস থেকে শুরু করে বহির্বিশ্বের অনেক দেশেও। তাদের লক্ষ্য স্পষ্ট, আমেরিকা লকহিড মার্টিনের উপর নির্ভরশীল হলেও, লকহিড মার্টিনকে যেন আমেরিকার উপর নির্ভরশীল না থাকতে হয়।