ফেরিওয়ালা থেকে আকিজ গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা শেখ আকিজ উদ্দিন | Akij Uddin Success Story | Business Mania
শূন্য থেকে শুরু করা এক মানুষ, যিনি জীবনের কঠিন পথে হেঁটে নিজেকে গড়ে তুলেছিলেন কিংবদন্তি হিসেবে। শেখ আকিজ উদ্দিন, একসময়ের কমলালেবু ফেরিওয়ালা, পকেটে মাত্র ১৭ টাকা নিয়ে শুরু করেছিলেন তার জীবনের ব্যবসায়িক যাত্রা। আজ, তার প্রতিষ্ঠিত আকিজ গ্রুপ (Akiz Group) বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্প গ্রুপগুলোর একটি, যার মালিকানায় রয়েছে ২৯টি শিল্প কারখানা এবং ৫০ হাজারেরও বেশি কর্মচারী।
বিজনেস ম্যানিয়ায় আজকের এই ব্লগ পোস্টে, আমরা দেখব, একসময়ের এই সাধারণ মানুষ, শুধুমাত্র মেধা, পরিশ্রম ও আত্মবিশ্বাসের উপর ভর করে কিভাবে হাজার কোটি টাকার এক সাম্রাজ্য গড়ে তুলেন।
শেখ আকিজ উদ্দিনের জন্ম ১৯২৯ সালে খুলনার ফুলতলা উপজেলার মধ্যেডাঙ্গা গ্রামে। তার বাবা শেখ মফিজউদ্দিন ছিলেন একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এবং মা মাতিনা বেগম ছিলেন একজন গৃহিণী। ছোটবেলা থেকেই শিক্ষার পরিবর্তে পরিবারের জীবিকা অর্জনে মনোনিবেশ করতে হয় তাকে। শেখ আকিজ উদ্দিন স্কুলে ভর্তি হলেও দারিদ্র্যের কারণে পড়াশোনায় নিয়মিত হতে পারেননি। ফলে, তিনি তার বাবার ক্ষুদ্র ব্যবসায় সাহায্য করতে বাধ্য হন। মা এর দেয়া ২-৪ আনা জমিয়ে রেল স্টেশনে বাদাম, লজেন্স কিনে দুই পয়সা মুনাফার চেষ্টা ছিল আকিজের ।
কিন্তু, জীবনের দারিদ্র্য এবং পরিবারের কষ্ট তাকে ঠেলে দেয় কলকাতায়। ১৯৪২ সালে, মাত্র ১৩ বছর বয়সে তিনি পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কলকাতায় পাড়ি জমান। কলকাতায় এসে শেখ আকিজ উদ্দিন জীবনের এক ভিন্ন অধ্যায়ের সূচনা করেন। তার পকেটে ছিল মাত্র ১৭ টাকা, আর ছিল না কোনো স্থায়ী আশ্রয়, তাই তাকে শিয়ালদহ রেলস্টেশনে রাত কাটাতে বাধ্য হন দিনের পর দিন। জমানো টাকা শেষ হয়ে আসছে দেখে তিনি সিধ্বান্ত নেন অল্প পুঁজি দিয়ে কোনো ব্যবসা শুরু করবেন। প্রথমদিকে কমলা লেবু বিক্রি করেই জীবিকা নির্বাহ করতে থাকেন। স্বল্প লাভ হওয়া সত্ত্বেও তার কঠোর পরিশ্রম এবং ইচ্ছাশক্তির জোরে এই ব্যবসা থেকে তিনি কিছু অর্থ সঞ্চয় করতে সক্ষম হন।
তবে শুধুমাত্র কমলার ব্যবসা নয়,এর পাশাপাশি কলকাতায় ঠেলা গাড়িতে করে মনিহারির পশরা ও সাজান ছোট্ট আকিজ। ছোট এই ব্যবসাগুলি তাকে একটু একটু করে যখনি আত্মবিশ্বাস এনে দেয়, তখনি কলকাতার কঠিন পরিবেশ এবং আইনি জটিলতায় তিনি একাধিকবার বাধাপ্রাপ্ত হন। তাকে অনুমতি ছাড়া রাস্তায় দোকান সাজানোর জন্য পুলিশ গ্রেফতার করে এবং তাকে তিন দিনের জেল খাটতে হয়। এই প্রতিকূল অবস্থার মধ্যেও শেখ আকিজ উদ্দিন কখনো দমে যাননি। জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরেও তিনি তার উদ্যোগ চালিয়ে যেতে থাকেন।
কিছুকাল পর, কলকাতায় তার অবস্থার উন্নতি হলেও, তিনি সিদ্ধান্ত নেন যে নিজের দেশে ফিরে আসবেন। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে নিজের দেশেই তার দীর্ঘমেয়াদি সাফল্যের পথ সুগম। কলকাতা থেকে ফিরে আসার পর, তিনি খুলনায় নতুনভাবে জীবন শুরু করার পরিকল্পনা করেন।
খুলনায় ফিরে এসে তিনি তার পুরনো বন্ধুর নিতাই এর সাথে সাক্ষাত হয়, নিতাই এর পিতা বিধু বাবু তখন বিড়ি তৈরির ব্যবসায় যুক্ত ছিলেন আর সেই বিড়ির নাম ছিল ‘বিধুর বিড়ি’। শেখ আকিজ উদ্দিন বিধু বাবুর কাছ থেকে বিড়ি ব্যবসার সমস্ত কলাকৌশল শিখতে থাকেন।তিনি বন্ধু নিতাই এর সাথে প্রায় ই যেতেন খুলনাতে তামাক কিনতে। এছাড়া বিড়ি তৈরির পদ্ধতির শিখে ফেলেন দ্রুতই। আর এই অভিজ্ঞতা ছিল তার উদ্যক্তা হওয়ার প্রেরনা। কিন্তু হঠাত ই মৃতু এসে কেড়ে নিয়ে যায় আকিজ উদ্দিনের মা কে। মা এর শেষ ইচ্ছা পুরন করার জন্য বিয়ে করেন নিজ গ্রামের ছকিনা খাতুন কে। আর শশুর এর ইচ্ছায় স্থানিয় বাজারে মুদির দোকান দেন। গ্রাম্য হাটের দিন তার দোকানে বিড়ির আসর বসতে দেখে নিজেই বিড়ি তৈরি করা সিদ্ধান্ত নেন। ক’দিন বাদেই তিন জন কর্মচারী নিয়ে আকিজ উদ্দিন বিড়ি তৈরি কারখানা চালু করেন আর পন্যের নাম দেন আকিজ বিড়ি ।
সেই সময় বিড়ি তৈরির প্রধান উপাদান টেন্ডু ও তামাক পাতা আমদানী করতে হত। স্বল্প পুজী থাকায় তাই বাজারের অন্যান্য বিড়ির সাথে প্রতিযোগিতায় পেরে উঠছিলেন না আকিজ। তাই তিনি বিড়ির স্বাদ , গন্ধ আর বিপনন কৌশল এর দিকে বেশি গুরুত্ব দিতে থাকেন। যেহেতু তখন প্যাকেট এ কোন ব্রান্ডিং থাকতো না তাই তিনি বিভিন্ন বিড়ির প্যাকেট এ আকিজ বিড়ি ঢুকিয়ে দিতেন। আর এভাবেই তার বিঁড়ি জনপ্রিয়তা পায়।
কিন্তু আকিজের এই সাফল্য তাকে অনেক ব্যবসায়ির ঈর্ষা ও ষড়যন্ত্রের মুখে ফেলে দেয়। এক সন্ধায় দোকানে থাকা কালীন অবস্থায় আকিজ ও তার সহকারি মহন আগুন দুর্ঘটনার স্বীকার হোন। এক নিমিষে শেষ হয়ে যায় আকিজের সমস্ত পুঁজি। পথে বসে যান আকিজ উদ্দিন। কিন্তু দমে না গিয়ে নিজের জমানো ৩০ হাজার টাকা দিয়ে আবার ব্যবসা শুরু করেন।
১৯৫৬ সালে আকিজ একটি বেবি ট্যাক্সি কিনে নিজেই বাজারে বাজারে নিজের পণ্য সাপ্লাই করা শুরু করেন,আর ধিরে ধিরে তিনি তার ব্যবসার পরিধি বাড়াতে থাকলে আকিজ বিড়ি দ্রুত দেশের বিভিন্ন স্থানে জনপ্রিয়তা পেতে থাকে। বিড়ি ব্যবসা থেকে প্রাপ্ত লাভের টাকা তিনি আরও বড় ব্যবসায় বিনিয়োগ করতে শুরু করেন।
৬০-এর দশকের শেষের দিকে, শেখ আকিজ উদ্দিন পাট ব্যবসায় প্রবেশ করেন। পাট তখন ছিল বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান অর্থনৈতিক পণ্য। তার বিড়ির ব্যবসা থেকে প্রাপ্ত সঞ্চয় দিয়ে তিনি পাট ব্যবসায় বিনিয়োগ শুরু করেন। বিড়ি কারখানার জন্য কেনা ২০ বিঘা জমির একাংশে তিনি পাটের গুদাম হিসাবে ব্যবহার করা শুরু করেন। এই সময় পাটের ব্যবসায় উল্লেখযোগ্য লাভের মুখ দেখেন তিনি। দেশের অভ্যন্তরে এবং আন্তর্জাতিক বাজারে পাটের প্রচুর চাহিদা থাকায়, শেখ আকিজ উদ্দিনের পাট ব্যবসা দ্রুত সাফল্য অর্জন করে। কিন্তু এখানেও তিনি ধাক্কা খান। তার ব্যবসায়িক অংশীদার ২ লক্ষ টাকা আত্বসাত করে পালিয়ে যান। যা পুষিয়ে নিতে আকিজের বেশ বেগ পেতে হয়। এর পর আর কখনো অংশীদারী ব্যবসা তে যোগ দেন নি আকিজ উদ্দিন।
পাট ব্যবসার সাফল্য তাঁকে নতুন খাতে বিনিয়োগ করতে উৎসাহিত করে, এবং এই সময়ে তিনি বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের দিকে নজর দেন।
১৯৭০ সালে এক বন্ধুর সহয়তায় ৫ লাখ টাকা ঋণ নেন যা তার ব্যবসায় বেশ গতি আনে।
১৯৭৭ সালে সরকার লোকসানে চলা ‘ঢাকা টোবাকো ইন্ডাস্ট্রিস’(Dhaka Tobacco Industries) বিক্রি করার সিধান্ত নেয়। শেখ আকিজ উদ্দিন নিজের বিড়ির ব্যবসার পরিধি বাড়ানোর উদ্দ্যেশে প্রায় ৮৩ লক্ষ টাকা দিয়ে ‘ঢাকা টোবাকোর মালিকানা স্বত্ত কিনে নেন।লোকসানে চলা এই কারখানা কে লাভের মুখ দেখান আকিজ উদ্দিন। ১৯৭৮ ‘ঢাকা টোবাকো ইন্ডাস্ট্রিস’(Dhaka Tobacco Industries) ছিল দেশের মধ্যে ৩য়। প্রায় ৪ হাজার লোকবল নিয়ে চলা এই কারখানায় দৈনিক প্রায় ৩৫ হাজার কোটি সিগারেট উৎপাদিত হত। ২০১৮ সালে আকিজের তামাক বিভাগ প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকায় জাপান টোবাকোর কাছে বিক্রি হয় যা ছিল বাংলাদেশে যা ছিল তৎকালীন সময়ের সবচেয়ে বড় একক প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগ।
১৯৮০-এর দশকে শেখ আকিজ উদ্দিন চামড়াশিল্পে প্রবেশ করেন। এই সময়ে দেশের চামড়াশিল্প সংকটে ছিল, এবং অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ার পথে ছিল। এমনই একটি প্রতিষ্ঠানের নাম ছিল স্কটিশ এন্ড ফ্যামিলি বা (Scottish And Family) লেদার। স্কটিশ এক পরিবার এই প্রতিষ্ঠান টি চালালেও লাভের মুখ দেখতোনা। আকিজ উদ্দিন যখন এটি ক্রয় করেন, তখন এটি ছিল একটি মৃতপ্রায় প্রতিষ্ঠান। চামড়া ব্যবসায় অভিজ্ঞতা না থাকায় আকিজ তখন নিজের মেজ ছেলে শেখ মোমিনউদ্দিনকে লেদার টেকনোলজি(leather Technology) ্নিয়ে পড়াতে ইংল্যান্ড পাঠান। লেখাপড়া শেষে মোমিনউদ্দিন এসে সাফ লেদার এর কান্ডারী হোন।
তিনি কারখানার আধুনিকায়ন করেন, নতুন প্রযুক্তি নিয়ে আসেন, এবং দক্ষ শ্রমিক নিযুক্ত করেন। এর ফলে সাফ লেদার(SAF leather) দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে পায়ের তলায় মাটি খুঁজে পায় এবং বাংলাদেশকে নতুন করে চামড়াজাত পণ্য রপ্তানিতে সক্ষম করে তোলে।
১৯৯২ সালে সেজো ছেলের হাতে তুলে দেন প্রথম ম্যাচ ফ্যাক্টরির দায়িক্ত। এই ফ্যাক্টরিতে তৈরী হয় দেশের প্রথম অটোমেটেড মেশিনে(Automated Machine) তৈরি ম্যাচ ডলফিন(Match Dolphin) যা এখনো দেশের ঘরে ঘরে এখনো সমান তালে চলছে।
ঢাকার ধামরাই এ ৫০ একর জমি এবং ছেলে শেখ বশির উদ্দিন কে নিয়ে আকিজ উদ্দিন শুরু করেন আকিজ ফুড এন্ড বেভারেজ লিমিটেড(Akij Food And Beverage Ltd) । তাদের প্রথম পণ্য ছিল ফার্ম ফ্রেশ(Farm Fresh) দুধ যা ক্রেতা দের মধ্যে চরম সাড়া ফেলে।
এর পর ফ্রটিকা সহ জনপ্রিয় সব ব্র্যান্ড(Brand) একের পর এক বাজারে আসে আর জনপ্রিয়তা পেতে থাকে। আকিজ ফুড এর কথা বললে মোজো্র নাম বলতেই হয়। জনপ্রিয় এই কোমল পানীয় এখন দেশিয় মার্কেট এ কোকা কোলা এবং পেপসির এর সাথে সমান তালে প্রতিযোগিতা করছে।
আর এত সব শিল্প প্রতিষ্ঠানের গোড়াপত্তন করে আকিজ উদ্দিন সৃষ্ট করে, আকিজ গ্রুপ(Akiz Group) এর।
আকিজ গ্রুপ বর্তমানে কাগজ, বোর্ড(board), টেক্সটাইল(textile), সিমেন্ট(cement), সিরামিক(Ceramic), খাদ্যপণ্য এবং নির্মাণসামগ্রী সহ অনেক খাতে নেতৃত্বস্থানীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে।
তাঁর প্রতিষ্ঠিত কোম্পানিগুলো এখন বাংলাদেশের শিল্প-অর্থনীতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং দেশের জন্য এক বিরাট অবদান রেখে যাচ্ছে।
শেখ আকিজ উদ্দিনের আকিজ গ্রুপ(Akiz Group) আজ বাংলাদেশের অন্যতম বৃহত্তম ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। তাঁর মৃত্যুর সময় আকিজ গ্রুপের অধীনে ছিল ৫০,০০০+ কর্মী এবং প্রায় ২৯টি শিল্প প্রতিষ্ঠান। 2009 সালের দিকে কোম্পানিটির মোট সম্পদের মূল্য দাঁড়িয়েছিল প্রায় ৮৯ বিলিয়ন(billion) টাকা। আকিজ উদ্দিনের শ্রম, মেধা ও নেতৃত্বের গুণাবলী তাঁকে দেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ের শিল্পপতি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে।
শেখ আকিজ উদ্দিনের ব্যবসায়িক সাফল্য তাঁকে বিভিন্ন সম্মাননা ও পুরস্কারে ভূষিত করে। তাঁর প্রচেষ্টা দেশের শিল্প-বাণিজ্যে বৈপ্লবিক পরিবর্তন নিয়ে আসে। তিনি পেয়েছেন বাংলাদেশ সরকার থেকে একাধিক ব্যবসায়িক সম্মাননা।
শেখ আকিজ উদ্দিন সমাজের প্রতি তার দায়িত্ববোধের জন্যও পরিচিত ছিলেন। তার সেবামূলক কাজগুলোর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো “আদ দ্বীন ফাউন্ডেশন(Ad-din Foundation)”।
এই ফাউন্ডেশন মূলত শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যসেবায় অবদান রেখে আসছে। দরিদ্র ও অসহায় মানুষের জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদানই এর প্রধান লক্ষ্য। গ্রামীণ অঞ্চলে যেখানে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ কম, সেখানকার মানুষের জন্য এই ফাউন্ডেশনটি কার্যকর ভূমিকা পালন করে আসছে। আকিজ উদ্দিন বিশ্বাস করতেন যে, সুস্থতা ছাড়া উন্নতি সম্ভব নয়। তাই, গ্রামের মানুষদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য তিনি বিনামূল্যে হাসপাতাল, ক্লিনিক এবং মেডিক্যাল ক্যাম্পের ব্যবস্থা করেছিলেন।
শুধু স্বাস্থ্য নয়, শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতিতেও তার উল্লেখযোগ্য অবদান ছিল। তিনি বহু স্কুল এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেছেন, বিশেষ করে যারা আর্থিকভাবে পিছিয়ে ছিল তাদের জন্য। শিক্ষার মাধ্যমে মানুষের জীবনে পরিবর্তন আনার জন্য তিনি অঙ্গীকারবদ্ধ ছিলেন।
আদ দ্বীন ফাউন্ডেশন(Ad-din Foundation) এর বাইরে, শেখ আকিজ উদ্দিন ব্যক্তিগতভাবে অনেক দাতব্য কাজ করেছেন। যেমন মসজিদ নির্মাণ, গরিবদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র এবং সমাজের দরিদ্র মানুষদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ।তার দানশীলতার কারণে তিনি স্থানীয়দের মধ্যে অত্যন্ত প্রিয় হয়ে উঠেছিলেন।
আকিজ উদ্দিনে ২০০৬ সালের ২৭ অক্টোবর মৃত্যু বরন করেন, এবং তিনি তার পিছনে রেখে যান এক বিশাল শিল্প সাম্রাজ্য এবং একাধিক উত্তরাধিকারী। তার পরিবার বর্তমানে আকিজ গ্রুপের পরিচালনায় নিয়োজিত, এবং তারা বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের শীর্ষস্থানীয় দায়িত্বে রয়েছেন।
আকিজ উদ্দিনের সন্তানদের মধ্যে বিশেষত দুইজন ছেলের নাম বেশ আলোচিত: শেখ নাসির উদ্দিন এবং শেখ বশির উদ্দিন। শেখ নাসির উদ্দিন বর্তমানে আকিজ গ্রুপের প্রধান নির্বাহী হিসেবে কাজ করছেন, যেখানে তিনি গ্রুপের সামগ্রিক কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। অন্যদিকে, শেখ বশির উদ্দিন গ্রুপের অধীনে থাকা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত।
আকিজ উদ্দিন একসময় কমলা বিক্রেতা হিসেবে জীবন শুরু করে, তিনি তার দূরদর্শী নেতৃত্বে এক বিশাল ব্যবসায়ী সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন, যা আজ দেশের অন্যতম বৃহৎ প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি। শুধু ব্যবসার মাধ্যমেই নয়, তার সমাজ সেবামূলক কাজ এবং মানবসেবা আজও তার নামকে উজ্জ্বল করে রেখেছে। আর তার উত্তরাধিকার রাও সেই ব্যবসায়িক সাম্রাজ্য বিস্তৃত ও বড় করে চলেছেন তার স্বপ্নের মতই।
আপনাদের কি মতামত? জানিয়ে দিন আমাদের কমেন্ট বক্স এ আর পড়তে থাকুন বিজনেস ম্যানিয়া।